সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী জ্ঞান ও বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতী ভক্তদের মানবীয় চেতনায় উদ্দীপ্ত করতে প্রতিবছর ধরাধামে আবির্ভূত হন। বিদ্যা ও ললিতকলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর আরাধনা করবে মর্ত্যরে ভক্তকুল। ঢাক-ঢোল-কাঁসর-শঙ্খ ও উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠছে দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজায় অংশ নিতে সার্বজনীন পূজা উৎযাপন ।
প্রতিনিধি যশোর:-
হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজা। সরস্বতী পূজা, বাণী অর্চনার আরাধ্য দিন। শুল্কা পঞ্চমীতে মঙ্গলবার(১৬ ফেব্রুয়ারি)শ্বেতশুভ্র কল্যাণময়ী বিদ্যাদেবীর আবাহন হবে। সকাল হতে উপবাস থেকে মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে ভক্তরা প্রার্থনা জানাবেন বিদ্যাধিষ্ঠাত্রীর। মা সরস্বতী জ্ঞানদায়িনী বিদ্যাদেবী সরস্বতী শ্বেতশুভ্র বসনা। তাঁর এক হাতে বীণা অন্য হাতে বেদপুস্তক। অর্থাৎ বীণাপানিতে যার তিনি বীণাপানি- সরস্বতী। আর এ থেকেই বাণী অর্চনার প্রচলন। বিদ্যাদেবীর কৃপালাভের আশায় রাজধানীসহ সারাদেশে মঙ্গলবার সকালে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছে। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর পাদপদ্মে প্রণতি জানাবেন পুণ্যার্থীরা।
সরস্বতী পুজো, বাগদেবীর আরাধনায় মেতেছে গোটা জেলা, ভোরবেলা থেকেই বাড়িতে বাড়িত শুরু হয়ে যায় পুজোর তোড়জোর ৷ সকাল থেকেই ঘরে ঘরে উলুর ধ্বনি, শাঁকে ফুঁ। যশোরের মণিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার,শত শত বাড়িতে পূজা উদযাপন করা হয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশে সকল জেলায় সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হয়েছে৷
শাস্ত্রমতে, প্রতিবছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে শ্বেতশুভ্রা কল্যাণময়ী বিদ্যাদেবী সরস্বতীর আরাধনা করা হয়। শ্বেতশুভ্র বসনা সরস্বতী দেবীর এক হাতে বেদ, অন্য হাতে (পাণি) বীণা থাকে। এ জন্য তাকে বীণাপাণিও বলা হয়। তাকে ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আধার হিসাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আরাধনা করেন। সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে তারা সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। এ ছাড়া বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি, ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদ এবং মহিলা ঐক্য পরিষদের নেতারা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশবাসীকে সরস্বতী পূজার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
করোনাকালে এবারের সরস্বতী পূজার আয়োজন হয়েছে সীমিত পরিসরে ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে। পূজার আনুষ্ঠানিকতার বাইরে অন্য কোন আড়ম্বরতা থাকছে না। মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরতি ও ধর্মীয় আলোচনা সভা কিংবা জনসমাগম হয় এমন আয়োজন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হবে। অন্যদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ১ বছর ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ কারণে এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সরস্বতী পূজার আয়োজন হচ্ছে না। তবে অন্যান্য মন্দির, পূজামণ্ডপ কিংবা ভক্তদের ঘরে ঘরে পূজার আয়োজন থাকছে।
আরো পড়ুন